শপথ নিয়েই ভারত সম্পর্কে কী বললেন শ্রীলঙ্কার নতুন রাষ্ট্রপতি?

সোমবার সকালে শ্রীলঙ্কার নবম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন অনুরা কুমারা দিসানায়েক। দেশের অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা এবং দুর্নীতির অবসান ঘটানো এখন বড় দায়িত্ব দিসানায়েককে। প্রধান বিচারপতি জয়ন্ত জয়সূর্য রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে দিসানায়েককে (৫৫) শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ গ্রহণের পর, দিসানায়েক বলেন যে, তিনি দেশের মধ্যে নবজাগরণের নতুন যুগের সূচনা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। উল্লেখ্য, শনিবার শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি পদে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
রবিবার শ্রীলঙ্কায় ঘোষিত নির্বাচনী ফলাফলে, জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) দলের নেতা এবং ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের প্রার্থী দিসানায়েকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। দিসানায়েক তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সামাগি জনা বালাভেগয়া (এসজেবি)-র সজিথ প্রেমাদাসাকে পরাজিত করেছেন। দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ২০২২ সালে ব্যাপক গণআন্দোলনের পর এটিই প্রথম নির্বাচন। এই গণআন্দোলনে গোটাবায়া রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। দিসানায়েক নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রথম জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জনাদেশের সম্মান করতে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহেকে ধন্যবাদ জানান।
দিসানায়েক ও তাঁর দল চীনের দিকে ঝুঁকে আছে বলে ধারণা করা হয়। তবে বর্তমানে, প্রাথমিক বিবৃতি ভারতের পক্ষে দেখা গেছে। দিসানায়েকের দলের তরফে বলা হয়েছে, তাঁদের দেশ কোনও ধরনের ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়াবে না এর পাশাপাশি নিজেদের দেশকে অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে দেবেন না। এই বক্তব্যকে অনুরার পক্ষ থেকে ভারতকে আশ্বস্ত করা হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ অনুরা কুমারা দিসানায়েককে চীনের বন্ধু বলে মনে করা হয়।
দিসানায়েকের দলের মুখপাত্র বিমল রত্নায়েকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'শ্রীলঙ্কার ভূখণ্ড অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না।' এনপিপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক অনিল জয়ন্তী বলেন, 'ভারত নিশ্চিত রূপে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং মহাশক্তি। ভারতের নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। ভারত মহাসাগরে শ্রীলঙ্কার রণনীতিক স্থিতি তার ভূ-রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা বাড়িয়েছে।'
দিসানায়েকে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে, দেশে ক্ষমতা হস্তান্তরের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দীনেশ গুণবর্ধনে তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দেনন। গুণবর্ধনে (৭৫) জুলাই ২০২২ থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গুণবর্ধনে, দিসানায়েককে লেখা একটি চিঠিতে বলেছেন যে, তিনি নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কারণে পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন এবং তিনি নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবেন।
নির্বাচনের সময়, দিসানায়েকের দুর্নীতিবিরোধী বার্তা এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করেছিল, যারা অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবী জানিয়ে আসছেন।
Leave a Comment