বাইরের পর ঘরেই বিপদ মোদির,প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সেনা এবং সাংসদের

শিলিগুড়িবার্তা ওয়েবডেস্ক, ২৭ অক্টোবর : বাইরের পর ঘরেই বিপদ মোদীর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সেনা এবং সাংসদের কথায় আছে একা রামে রক্ষা নেই তায় সুগ্রীব দোসর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যেন সেরকমই অবস্থা। রাফাল আর সিবিআই নিয়ে যখন দেশ তোলপাড়, যখন বিরোধী পালে জব্বর হাওয়া তখনই ঘরের মধ্যে বিদ্রোহের সুর।
মূলত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রধান মুখপাত্র স্বর্ণশ্রী রাও রাজশেখরের এক টুইটকে কেন্দ্র করে বেজায় চটেছেন প্রাক্তন সেনাকর্মীরা। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবী করেছেন খোদ বিজেপির এক সাংসদ। রাতারাতি ওই টুইট মুছে ফেলেও তীব্র ক্ষোভের মুখে সরকার এবং ছুটিতে পাঠানো হয়েছে স্বর্ণশ্রীকে। নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কর্নেল আমন আনন্দকে। সমস্যার শুরু হয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আমলার গাড়ির বনেটে সেনাবাহিনীর পতাকা লাগানো নিয়ে। সেনাবাহিনীর ওয়েস্টার্ন কম্যান্ডের অভ্যন্তরীণ আর্থিক উপদেষ্টার গাড়িতে লাগানো ছিল সেনাবাহিনীর ওই প্রতীক। সেই ছবি রিটুইট করে প্রাক্তন নৌসেনাধ্যক্ষ অ্যাডমিরাল অরুণ প্রকাশ এর সমালোচনা করে বলেন, "একজন অসমারিক ব্যক্তি সামরিক প্রতীক ব্যবহার করলে সেটা অপরাধ হিসেবে গণ্য না-করা হলেও, দায়িত্বে থাকা আধিকারিক তাঁর উপদেষ্টাকে বুঝিয়ে দিতে পারতেন যে, এটা তিনি অনুমোদন করেননা"।
পরবর্তীতে জবাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রধান মুখপাত্র স্বর্ণশ্রী টুইট করেন সরাসরি প্রকাশকে আক্রমণ করে লেখেন, "সেনাবাহিনীর অফিসার থাকার সময়ে আপনার বাড়িতে যে জওয়ানদের অপব্যবহার করা হত, তার বেলা? ফৌজি গাড়িতে ছেলেমেয়েদের স্কুলে আনা-নেওয়া নিয়েই বা কী বলবেন? সরকারি গাড়িতে ম্যাডামের বাজার-অভিযানের কথাও ভুললে চলবে না। আর পার্টির তো কোনও শেষ নেই... এ সবের খরচ কে জোগায়?’’ এরপরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে যায় স্বর্ণশ্রীর ওই মন্তব্যের। যদিও সেনাবাহিনীর তরফে সরাসরি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে প্রাক্তন সেনাকর্মীরা তুলোধোনা করতে থাকেন স্বর্ণশ্রীর মত মানসিকতার আমলাদের। অসামরিক এবং কাগজে কলমে কাজ করা আমলাদের পক্ষে যে সামরিক বাহিনীর কর্মীদের অবদান ও মর্যাদা বোঝা সম্ভব নয়, তা জানিয়ে কটাক্ষের ঝড় ওঠে। ডিফেন্স অ্যাকাউন্টস সার্ভিসেস ক্যাডার স্বর্ণশ্রীকে এই পদে বসিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাই সীতারামনের উদ্দেশ্যে টুইট বার্তায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল হর্ষ কপূর বলেন, ‘‘ম্যাডাম, সামরিক বাহিনীকে রক্ষা করাটা আপনার দায়িত্ব, অপমান করা নয়। কিন্তু তিন বাহিনী সম্পর্কে সরকারের আসল মনোভাবটা সামনে চলে এসেছে। এমন এক জনকে আপনার মন্ত্রকের মুখপাত্র করে রাখাটা দেশের পক্ষে অপমানজনক।’’
এই ঘটনায় বেজায় চটে বিজেপির সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর ওই মুখপাত্রের এমন ঔদ্ধত্য প্রকাশ নিয়ে তদন্তেরও দাবি করেছেন। প্রশ্ন তোলা হয়, জীবন দিয়ে যাঁরা দেশরক্ষা করেন, তাঁদের প্রতি এটাই তাহলে কি মোদী সরকারের আসল মনোভাব! যে মোদী সেনাবাহিনী নিয়ে এতই স্পর্শকাতর বলে দাবী করা হয় সেই মোদীর আমলাই যদি সেনাবাহিনী সম্পর্কে এমন অপমানজনক কথা বলেন তবে সেনাবাহিনীর মনোবল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
Leave a Comment