গ্রাউন্ড জিরো বিজনেস ব্যাটল ২০২৫: এসআইটিতে তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী লড়াই
ভাস্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: বিশ্ব উদ্যোক্তা দিবসকে (২১ অগাস্ট) সামনে রেখে শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এসআইটি) আয়োজন করেছিল এক বিশেষ আন্তঃবিভাগীয় ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা, গ্রাউন্ড জিরো বিজনেস ব্যাটল ২০২৫। কলেজের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রফেশনাল স্টাডিজের এই অনন্য উদ্যোগটির মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও বাস্তবসম্মত ব্যাবসায়িক চিন্তাধারাকে উৎসাহিত করা। এসআইটি-র স্যার জে.সি. বোস মেমোরিয়াল সেমিনার হলে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও অতিথিদের বরণ করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়।
এদিনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিভ ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের সিইও এবং মহারাজা অগ্রসেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান শ্রী নীরজ চৌধুরী। তিনি তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে বলেন, "উদ্যোক্তা হওয়া কেবল একটি নতুন ব্যবসা শুরু করা নয়, বরং এটি একটি দূরদৃষ্টি, সৃজনশীলতা এবং ঝুঁকি গ্রহণের সাহস। আগামীর উন্নত ভারত গড়ে তোলার দায়িত্ব সেই তরুণ প্রজন্মের, যারা তাদের সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।"
দিনব্যাপী চলা এই প্রাণবন্ত প্রতিযোগিতায় বিসিএ, বিএইচএইচএ, বিবিএ, বিবিএ-এটিএ এবং বিএসসি সাইকোলজি সহ বিভিন্ন বিভাগের মোট ছয়টি দল তাদের উদ্ভাবনী স্টার্টআপ ধারণা নিয়ে মঞ্চে আসে। প্রতিটি দল তাদের মৌলিক ভাবনাগুলোকে কেবল উপস্থাপনই করেনি, বরং সেগুলোকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য সুপরিকল্পিত বিপণন কৌশল, বাস্তবসম্মত আর্থিক মডেল এবং গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সমাধানেরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়। তাদের অসাধারণ উপস্থাপনা ও গভীর বিশ্লেষণ বিচারকদের মুগ্ধ করে।
এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ ও বিবিএ-এটিএ) বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান পারমিতা চৌধুরী বলেন, "প্রফেশনাল স্টাডিজের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মিলিত সৃজনশীলতা ও মেধার মেলবন্ধনে এই প্রতিযোগিতা এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিবিএ-এটিএ বিভাগের দল প্রথম স্থান অর্জন করে, বিবিএ ৫ম সেমিস্টারের দল দ্বিতীয় এবং বিএইচএইচএ বিভাগ তৃতীয় স্থান লাভ করে। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলকে স্মারক মেডেল ও শংসাপত্র প্রদান করা হয়। আজকের এই আয়োজন প্রমাণ করল যে আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলগত চেতনা ও প্রতিভা কতটা শক্তিশালী।"
এই ধরনের প্রতিযোগিতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এসআইটি-র প্রফেশনাল স্টাডিজ কলেজের প্রিন্সিপাল-ইন-চার্জ ড. অরুন্ধতী চক্রবর্তী বলেন, "আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি হাতে-কলমে বাস্তব জ্ঞান দেওয়া। এই ধরনের ইভেন্ট তাদের আত্মবিশ্বাসকে দৃঢ় করে এবং ভবিষ্যতের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী হিসেবে তাদের পথ সুগম করে।"
একইভাবে, শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এসআইটি) ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল-ইন-চার্জ ড. জয়দীপ দত্ত বলেন, "শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার পাশাপাশি এই ধরনের প্রতিযোগিতা উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। নতুন ভারত গড়ার স্বপ্নপূরণে এই উদ্যোগের ভূমিকা অপরিসীম।"
অন্যদিকে, শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ আরও বাড়াতে এবং তাদের উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করতে ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও প্রতিযোগিতা ও কর্মশালা আয়োজনের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
Leave a Comment